শবে বরাতের নামাজের নিয়ম আছে কি?
শবে বরাত বা নিফসে শাবানের ইবাদতের বিশেষ ফজিলত রয়েছে। আজকের রাতের সব প্রার্থনা নিষ্ফল। হাদিসে বর্ণিত শব বরাতের ইবাদতের কোনো বিশেষ বাধ্যবাধকতা, ওয়াজিব বা সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ নেই।
কুরআন ও হাদিসের আলোকে আলেমরা শবে বরাতের কুরআন তেলাওয়াত, জিকির-আজকার, দুআ-ইস্তেগফার ও নফল নামাজ সম্পর্কে কথা বলেন।
হাদিস থেকে জানা যায় যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেই রাতে দীর্ঘ সময় নফল নামায পড়েছিলেন। নির্দিষ্ট বা পৃথক নিয়মের অধীনে আল্লাহর রাসূল ও তাঁর সাহাবীদের দ্বারা এই রাতে সালাত বা অন্যান্য ইবাদত করার কোন প্রমাণ নেই।
তবে এ রাতের আশেপাশে বিভিন্ন গ্রন্থে নামাজ পড়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম-কানুন রয়েছে, অর্থাৎ এত রাকাত নামাজ পড়তে হবে, প্রতি রাকাতে এই সূরাটি এতবার পড়তে হবে; এগুলো সঠিক নয়। হাদীস শরীফে এমন কোন নিয়ম নেই, এগুলো মানুষের তৈরি পদ্ধতি।
কেউ শবে বরাতের নফল নামায পড়তে চাইলে তাদের নিয়ম হল অন্যান্য নফল নামাযের মত দুই রাকাত নামায পড়া। প্রতি রাকাতে সূরা ফাতেহার পর পবিত্র কুরআনের যে কোন সূরা পাঠ করা। অতঃপর রুকু-সিজদা আদায় করুন এবং অন্যান্য রুকন যথারীতি আদায় করুন। এভাবে দুই রাকাত নামাজ শেষ করুন।
দু-চার রাকাত নামাজের পর দোয়া-দরূদ, তসবি-তাহলিল পাঠ, যিকির ও কিছুক্ষণ কোরআন তেলাওয়াত। তারপর আবার নামাজে দাঁড়ান। নামাজের পর আবার জিকির-আজকার, কোরআন তেলাওয়াত, তওবা-ইসতেগফার, ধর্মীয় আলোচনা শোনা, কোরআন-হাদিসের ব্যাখ্যা পাঠ ইত্যাদি।
এভাবে যত রাকাত নামাজ পড়তে পারেন। রাকাতের নির্দিষ্ট সংখ্যাও নেই। পবিত্র কুরআনে যথাসম্ভব নফল ইবাদত করার উল্লেখ রয়েছে। আল্লাহ তায়ালা যা সম্ভব তার বাইরে কিছু চাপিয়ে দেন না।
এই নিয়মটি বলা হয়েছে কারণ কিছু লোক শুধুমাত্র একটি কাজ করলে বিরক্ত হতে পারে, তাই কাজগুলি পরিবর্তন করে এই বরকতময় রাতটি ইবাদতে কাটানো সহজ হবে।
তবে শবে বরাতের নফল নামাজ, ইবাদত-বন্দেগীর ব্যাপারে বাড়াবাড়ি বা বাড়াবাড়ি করা যাবে না। কেননা, ইসলামে নফল নামাযের সুনির্দিষ্ট বিধি-বিধান প্রতিষ্ঠা সম্পূর্ণ আবিষ্কৃত বিদআত। সকল যুগের সকল আলেম এ বিষয়ে একমত।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও খুলাফায়ে রাশেদীনের সাহাবায়ে কেরাম কখনোই তা পড়েননি। এই রাতে আপনার কাছে অনেক সময় থাকলে, আপনি সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ দোয়া, সালাতুত তাসবীহ পাঠ করতে পারেন। জীবনে একবার হলেও এই দোয়াটি পড়ার দরকার আছে। (আবু দাউদ, হাদিস 1297, ইবনে মাজা, হাদিস 1387, বায়হাকী কুবরা, হাদিস 4695)
আজকের আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url