ajkerit

কখন রোজা রাখা হারাম - যে পাঁচ দিন রোজা রাখা হারাম

 

যে পাঁচ দিন রোজা রাখা হারাম

ঈদুল আজহার (১০ জিলহজ) দিন এবং পরের দিন অর্থাৎ জিলহজ মাসের ১১, ১২ ও ১৩ তারিখ। এই পাঁচদিন সব ধরনের রোজা রাখা হারাম বা নিষিদ্ধ। অবশ্য তামাত্তু বা কিরানকারী হাজিরা যদি কোনো কারণে কোরবানি দিতে অপারগ হয় তাহলে এর পরিবর্তে মক্কায় জিলহজ মাসের ১১, ১২ ও ১৩ তারিখে রোজা রাখবে। উল্লেখ্য, বিরামহীনভাবে সারা বছর রোজা রাখা নিষেধ।


যে পাঁচ দিন রোজা রাখা হারাম

ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের মধ্যে রোজা অন্যতম। এজন্য আল্লাহ তায়ালা পুরো এক মাসই বরাদ্দ করে দিয়েছেন তার বান্দাদের। রমজান ছাড়াও বিভিন্ন নফল রোজা রাখেন সবাই। রোজা পালনকারীদের জন্য অনেক সওয়াব ও পুরস্কারের ঘোষণা রয়েছে কোরআন ও হাদিসে। 

রোজা ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ বিধান। একজন মুসলিমকে ইসলামের যে মৌলিক বিষয়গুলো মেনে চলতে হয় তার একটি রোজা। বছরে এক মাস রোজা রাখা ফরজ। এছাড়াও পুরো বছর প্রত্যেক সপ্তাহ, মাস ও বিশেষ দিনে বেশ কিছু নফল রোজা রয়েছে। যা পালনে বিশেষ সওয়াবের কথা বর্ণিত হয়েছে হাদিসে। 

রমজানের ফরজ রোজার দিনগুলো ছাড়া যেকোনও দিন নফল রোজা রাখা যায়। তবে বছরে এমন পাঁচটি দিন রয়েছে, যে দিনগুলোতে ফরজ, নফল কোনও রোজাই রাখা যায় না। হাদিসে এদিনগুলোতে রোজা রাখাকে হারাম বলা হয়েছে। 

ঈদুল ফিতর, ঈদুল আজহা ও আইয়ামে তাশরিক

এই পাঁচ দিন হল-১. ঈদুল ফিতরের দিন (১লা শাওয়াল)। 2. ঈদুল আজহার দিন (10 ই জিলহজ)। 3. তাশরীকের দিনগুলিতে রোজা রাখাও নিষিদ্ধ। অর্থাৎ জিলহজ মাসের 11, 12 ও 13 তারিখ।

আবু সাঈদ খুদরি (রা.) বলেন, ‘নবী (সা.) ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার দিন রোজা রাখতে নিষেধ করেছেন।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৯৯২; মুসলিম, হাদিস : ৮২৭)


আরেকটি হাদিসে আবু উবাইদা (রা.) বলেন, আমি উমর ইবনুল খাত্তাব (রা.)-এর সঙ্গে ঈদের নামাজ আদায় করেছি। তিনি বলেছেন, এ দুই দিনের রোজা রাখাতে নবী (সা.) নিষেধ করেছেন। প্রথম দিন হলো- যখন তোমরা রোজা শেষ করো; আর দ্বিতীয় দিন হলো- যখন তোমরা কোরবানির গোস্ত খাবে। (বুখারি : ২/২৭২; হাদিস : ১৮৫১)



পুরো বছর বিরামহীনভাবে রোজা রাখা

এই পাঁচ দিন রোজা রাখা সম্পূর্ণ হারাম। তবে এটাও বলা হয়েছে যে বছরের বেশ কিছু দিন রোজা রাখা হয় না। তার মধ্যে একটি হলো সারা বছর একটানা রোজা রাখা। কারণ হাদিসে এভাবে রোজা রাখতে নিষেধ করা হয়েছে।


হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি সর্বদা রোজা রাখ এবং সারা রাত নামাজ পড়? আমি বললাম হ্যাঁ, হ্যাঁ।


তিনি বললেনঃ এমনটি করলে তোমার চোখ নিস্তেজ হয়ে যাবে এবং শরীর দুর্বল হয়ে পড়বে। যে ব্যক্তি সারা বছর রোজা রাখে সে যেন রোজা রাখে নি। তিন দিন (প্রতি মাসে) রোজা রাখা সারা বছর রোজা রাখার সমতুল্য।


আমি বললাম, এর চেয়ে বেশি সামর্থ্য আমার। নবীজি বললেন, তাহলে তুমি 'সাওমে দাউদ' পালন কর। আমি একদিন রোজা রাখতাম, অন্যদিন ভঙ্গ করতাম। (অতএব, তিনি দুর্বল হবেন না) এবং শত্রুর মুখোমুখি হলে পলায়ন করবেন না। (বুখারি, 1978)


শুধু শুক্রবারের রোজা

ফেকাহবিদদের মতে, নির্দিষ্ট করে কেবল শুক্রবার রোজা রাখাও উচিত নয়। অবশ্য এর আগে বা পরে মিলিয়ে দুটি রোযা রাখা যাবে।

শাবানের ৩০ তারিখ

একইভাবে শাবান মাসের ৩০ তারিখে যদি রমজানের চাঁদ উদিত হওয়ার ব্যাপারে গ্রহণযোগ্য নিশ্চয়তা না পাওয়া তবে সে দিন রোজা থাকা নিষিদ্ধ।এটিকে ইয়ামুশ শাক বা সন্দেহের দিন বলা হয়। কারণ সে দিন সন্দেহ থাকে যে, এটি কি শাবান মাসের ৩০ তারিখ না কি রামজান মাসের ১ম তারিখ? তাই সে দিন রোজা থেকে বিরত থাকা আবশ্যক।



যে ৫ দিন রোজা রাখা হারাম

রোজা ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের একটি। রমজান মাসে রোজা রাখা ফরজ। কোনো বিশেষ উদ্দেশ্যে রোজা রাখার মানত করলে তা রাখা ওয়াজিব। এর বাইরে বছরের বাকি সময় রোজা রাখা সুন্নত। তবে পুরো বছরে এমন পাঁচটি দিন রয়েছে, যে দিনগুলোতে সব ধরনের রোজা রাখাই হারাম। এখানে সেই দিনগুলোর কথা তুলে ধরা হলো—



যে পাঁচ দিন কোনো ধরনের রোজা রাখাই জায়েজ নয়, তা হলো—

  • ১. শাওয়ালের ১ তারিখ তথা ঈদুল ফিতরের দিন। 
  • ২. জিলহজের ১০ তারিখ তথা ঈদুল আজহার দিন। 
  • ৩. জিলহজের ১১ তারিখ তথা আইয়ামে তাশরিকের প্রথম দিন। 
  • ৪. জিলহজের ১২ তারিখ তথা আইয়ামে তাশরিকের দ্বিতীয় দিন। 
  • ৫. জিলহজের ১৩ তারিখ তথা আইয়ামে তাশরিকের তৃতীয় দিন। 



সাহাবি আবু সাঈদ খুদরি (রা.) বলেন, ‘নবী (সা.) ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার দিন রোজা রাখতে নিষেধ করেছেন।’ (বুখারি: ১৯৯২; মুসলিম: ৮২৭) আরেকটি হাদিসে আবু উবাইদা (রা.) বলেন, আমি ওমর ইবনুল খাত্তাব (রা.)-এর সঙ্গে ঈদের নামাজ আদায় করেছি। তিনি বলেছেন, ‘এ দুই দিনের রোজা রাখতে নবী (সা.) নিষেধ করেছেন। প্রথম দিন হলো, যখন তোমরা রোজা শেষ করো; আর দ্বিতীয় দিন হলো, যখন তোমরা কোরবানির মাংস খাবে।’ (বুখারি: ১৮৫১) 


একইভাবে তাশরিকের তিন দিনও রোজা রাখা হারাম হওয়ার বিষয়টি হাদিস থেকে প্রমাণিত। মহানবী (সা.) বলেন, ‘তাশরিকের দিনগুলো হচ্ছে পানাহার ও আল্লাহকে স্মরণ করার দিন।’ (মুসলিম: ১১৪১) 


এই সব হাদিস থেকে এবং সাহাবায়ে কেরামের ইজমা থেকে প্রমাণিত হয় যে, উল্লিখিত পাঁচ দিনে রোজা রাখা হারাম।



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আজকের আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url
ajkerit
ajkerit
ajkerit
ajkerit