কুষ্টিয়া জেলার দর্শনীয় স্থান - লালন শাহ সেতু
কুষ্টিয়া জেলার দর্শনীয় স্থান - লালন শাহ সেতু |
কুষ্টিয়া জেলার দর্শনীয় স্থান - লালন শাহ সেতু Lalon Shah Bridge
লালন শাহ সেতু বাংলাদেশের পদ্মা নদীর উপর নির্মিত একটি সেতু। কুষ্টিয়ার বিখ্যাত বাউল সম্রাট লালনশাহের নামে এই সেতুর নামকরন করা হয়েছে। সেতুটি হার্ডিঞ্জ ব্রিজের পাশেই অবস্থিত। সেতুটির পূর্ব পাশে ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশী এবং পশ্চিম পাশে ভেড়ামারা উপজেলা অবস্থিত। সেতুটি তৈরীর ফলে কুষ্টিয়া, মেহেরপুর,চুয়াডাঙ্গা ঝিনাইদহ জেলার লোকেদের যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজতর হয়েছে। এই সেতু বঙ্গবন্ধু সেতু অনুরুপ বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম সড়ক সেতু। লালন শাহ্ সেতু বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়ন এবং পরিবহন ব্যবস্থা প্রসারে অনেক অবদান রেখে চলেছে।
লালন শাহ সেতু ইতিহাসঃ
২০০১ সালের ১৩ জানুয়ারি বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেতুটির ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০০৩ সালে। সেতুটির দৈর্ঘ্য ১.৮ কিমি এবং প্রস্থ ১৮.১০ মিটার। মোট স্প্যনের সংখ্যা ১৭টি। সেতুটি সম্পূর্ণভাবে যান চলাচলের জন্য ১৮ মে ২০০৪ সালে বাংলাদেশ সরকারের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া উদ্বোধন করেন। সেতুটি চার লেন বিশিষ্ট।
লালন শাহ সেতু অবস্থানঃ
ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশী ইউনিয়নে অবস্থিত। ঈশ্বরদীর রূপপুরে সেতুর কোল ঘেঁষেই এর ঠিক দক্ষিণে নির্মিত হচ্ছে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় প্রোজেক্ট, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। তথ্যসুত্রঃ উইকিপিডিয়া
লালন শাহ সেতু
কুষ্টিয়া জেলা থেকে ৩১ কিলোমিটার দূরে হার্ডিঞ্জ ব্রিজের পাশেই পদ্মা নদীর উপর কুষ্টিয়া ও পাবনা জেলাকে সংযোগকারী লালন শাহ্ সেতু (Lalon Shah Bridge) অবস্থিত। কুষ্টিয়ার বিখ্যাত বাউল সাধক গুরু ফকির লালন সাঁই-এর নামে লালন শাহ্ সেতুর নামকরণ করা হয়েছে। পাকশী সেতু নামেও সুপরিচিত লালন শাহ সেতু বাংলাদেশের বৃহত্তম সড়ক সেতুগুলোর মধ্যে অন্যতম। ৭.৫ মিটার দুই লেন বিশিষ্ট এই সেতুর ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন করা হয় ২০০১ সালের ১৩ জানুয়ারিতে এবং ২০০৮ সালের ১৮ মে পূর্নাঙ্গরূপে যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়।
১.৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এবং ১৮.১০ মিটার প্রস্থ বিশিষ্ট লালন শাহ সেতু পাবনা ও কুষ্টিয়ার মধ্যে সড়কপথে যোগাযোগ স্থাপন করেছে। সেতুর মোট স্প্যানের সংখ্যা ১৭টি এবং প্রতিটি স্প্যানের মাঝে দূরত্ব ১০৯.৫ মিটার। সেতুর দুইটি লেনকে একটি ডিভাইডারের মাধ্যমে পৃথক করা হয়েছে। লালন শাহ্ সেতু বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্ছলের সাথে উত্তর-পশ্চিমাঞ্ছলের যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নের পাশাপাশি অর্থনৈতিক ও পরিবহন ব্যবস্থায় অবদান রেখে চলেছে।
পদ্মা ঢেউয়ের কলতান, সবুজে ঢাকা বাংলার রূপ ও উত্তাল হাওয়ার মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশের কারণে কুষ্টিয়ার একটি জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থানে পরিণত হয়েছে এই লালন শাহ্ সেতু। আর তাই প্রতিদিন অসংখ্য দর্শনার্থী সেতুর অপরূপ সুন্দর প্রাকৃতিক পরিবেশে সময় কাটাতে আসেন।
লালন শাহ সেতু কিভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে বাস ও ট্রেনে কুষ্টিয়ায় যাওয়া যায়। রাজধানীর কল্যাণপুর বাস স্ট্যান্ড থেকে নিউ এসবি সুপার ডিলাক্স, শ্যামলী, হানিফ পরিবহণের বাসে কুষ্টিয়া যেতে পারবেন। বাসের ভাড়া লাগবে নন এসি ৬০০-৭০০ টাকা, এসি ১০০০-১২০০ টাকা।
ট্রেন এ যেতে চাইলে সুন্দরবন এক্সপ্রেস, চিত্রা ও বেনাপোল এক্সপ্রেস এ যেতে পারবেন। সুন্দরবন এক্সপ্রেস সকালে ছেড়ে যায় ৮ টা ১৫ মিনিট এ, মধুমতি এক্সপ্রেস বিকাল ৩ টায় ও বেনাপোল এক্সপ্রেস রাত ১১ টা ৪৫ মিনিট এ কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে ছেড়ে যায়। ট্রেনের আসনভেদে টিকেট এর মূল্য ২৯০ থেকে ৮০০ টাকা। ট্রেনে গেলে আপনাকে কুষ্টিয়া কোর্ট স্টেশনে নামতে হবে। কুষ্টিয়া শহর থেকে রিকশা/ইজিবাইকের মত স্থানীয় পরিবহণে লালন শাহ্ সেতু দেখতে যেতে পারবেন।
তবে পাবনা থেকে লালন শাহ সেতুতে যাওয়া বেশ সুবিধাজনক। পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলা থেকে মাত্র ১৩ কিলোমিটার দূরে পাকশী রূপপুর প্রকল্পের পাশে পদ্মা নদীর উপর পাকশী লালন শাহ্ সেতুর অবস্থান। পাবনা জেলা সদর থেকে ১ ঘণ্টার রাস্তা পার হয়ে দাশুরিয়া মোড় হয়ে এই সেতু দেখতে যেতে পারবেন।
কোথায় থাকবেন
কুষ্টিয়া শহরে রাত্রি যাপনের জন্য হোটেল রাতুল, হোটেল নূর, হোটেল লিবার্টি, পদ্মা হোটেল ও শাপলা হোটেলের মতো বেশ কিছু মধ্যম মানের আবাসিক হোটেল আছে।
কোথায় খাবেন
কুষ্টিয়া শহর থেকে লালন শাহ্ সেতু যাওয়ার পথে পুনাক ফুড পার্ক, পিয়াজি ঘর, বিসমিল্লাহ কফি হাউজ, অবকাশ ক্যাফে, হোটেল লেক ভিউ ও সুন্দরী ইত্যাদি হোটেল ও রেঁস্তোরা থেকে প্রয়োজনীয় খাবারের চাহিদা মেটাতে পারবেন। আর সুযোগ পেলে অবশ্যই কুষ্টিয়ার বিখ্যাত তিলের খাজা ও কুলফি খেয়ে দেখবেন। তথ্যসুত্রঃ ভ্রমন গাইড
লালন শাহ সেতু চিত্রঃ
--- ---
আজকের আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url