ajkerit

যে সকল কারণে রোজা ভাঙা যাবে জেনে রাখুন

যে সকল  কারণে রোজা ভাঙা যাবে জেনে রাখুন 

যে সকল  কারণে রোজা ভাঙা যাবে জেনে রাখুন



যে সকল  কারণে রোজা ভাঙা যাবে জেনে রাখুন ঃ  যেসব কারণে রোজা ভেঙে যায় এবং তার প্রতিবিধান হিসেবে কাজা ও কাফফারা (ক্ষতিপূরণ) উভয়টি আদায় করতে হয়। তা হলো স্ত্রী-সম্ভোগ ও ইচ্ছাকৃত পানাহার। কেউ যদি ইচ্ছা করে রমজান মাসের দিনের বেলা স্ত্রীর সঙ্গে সহবাস করে অথবা পানাহার করে তবে তার রোজা ভেঙে যাবে। তার প্রতিবিধান হিসেবে ব্যক্তিকে রোজার কাজা ও কাফফারা করতে হবে।

ইসলামী শরীয়তের অন্যতম উদ্দেশ্য হলো মানুষের দুঃখ-কষ্ট দূর করা এবং জীবনকে সহজ করা। সর্বশক্তিমান আল্লাহ বলেন, 'আল্লাহ তোমাদের জন্য সহজ করতে চান।

(সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৫)। অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ দ্বিনের ব্যাপারে তোমাদের ওপর কোনো কষ্ট চাপিয়ে দেননি। ’ (সুরা হজ, আয়াত : ৭৮)।

রোজা ভাঙার কারণ সমূহ ঃ 

রমজান মাসে রোজা রাখা ফরজ কাজ। রোজা প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থ ও সবল মুমিনের জন্য ফরজ। তবে বিশেষ পরিস্থিতিতে রোজা ছেড়ে দেওয়া বা ভঙ্গ করা জায়েজ।

১ . আপনি অসুস্থ হলে: অসুস্থতা মানুষের শরীর ও মনের ভারসাম্য নষ্ট করে এবং কর্মক্ষমতা নষ্ট করে। অসুস্থ ব্যক্তির জন্য রোজা না রাখার ছাড় রয়েছে। লেখা আছে: "তোমাদের মধ্যে যে অসুস্থ বা ভ্রমণে আছে তাকে অন্য সময়ে 'এই নম্বর' পূরণ করতে হবে।" (সূরা বাকারা, আয়াত: ১৮৪ )।

অবস্থা এমন যে, রোগটি এমন মাত্রায় হয় যে ব্যক্তির অনেক ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, কষ্টের পরিমাণ বেড়ে যায় বা আরোগ্য লাভে বিলম্ব হয়। তেমনি একজন ধার্মিক, খোদাভীরু ও অভিজ্ঞ ডাক্তার রোজা রাখার বিরুদ্ধে পরামর্শ দিলে রোজা বাদ দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু তারপর সমাধান করতে হবে।

২ . বার্ধক্য: ইসলামী শরীয়ত খুব বৃদ্ধ পুরুষ ও মহিলাদের শারীরিকভাবে অক্ষম হলে রোজা না রাখার অনুমতি দেয়। যদি এমন হয় যে, বৃদ্ধ পুরুষ ও মহিলারা বছরের যে কোনো সময় রোজা রাখতে পারবেন না (ছোট দিন হোক বা দীর্ঘ দিন, শীত হোক বা গ্রীষ্ম) তাহলে তারা কাফফারা নেবে। পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে: "রোযার কারণে যারা অতিশয় কষ্ট ভোগ করে তাদের দায়িত্ব হলো তার পরিবর্তে কোন অভাবীকে খাবার দেয়া।" (সূরা বাকারা, আয়াত: ১৮৪)। 

আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ আয়াতটি এখনো রহিত হয়নি। বৃদ্ধ ও মহিলারা যারা রোজা রাখার সামর্থ্য রাখে না তারা প্রতিদিন রোজা না করে একজন অভাবী ব্যক্তিকে খাওয়াবেন। (তাফসিরে ইবনে কাসির)।

৩ . গর্ভাবস্থা: যদি একজন গর্ভবতী বা স্তন্যদানকারী মহিলা নিজের বা তার সন্তানের ক্ষতির আশঙ্কা করেন তবে তাকে রোজা না রাখার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ “নিশ্চয়ই আল্লাহ মুসাফিরদের জন্য রোযা ও অর্ধেক নামায অব্যাহতি দিয়েছেন এবং গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী মহিলাদের জন্য রোযা অব্যাহতি দিয়েছেন”। (সুনানে নাসায়ী, হাদিস : ২৩১৫ )।
কিন্তু পরের বার রোজা রাখতে হবে। আর যদি ক্ষতির আশংকা না থাকে, তাহলে তার রোজা ভাঙার অনুমতি নেই।

৪ . ভ্রমণ: ভ্রমণকারী ব্যক্তির জন্য রমজান মাসে রোজা না রাখার জন্য একটি ছাড় রয়েছে। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে: "তোমাদের মধ্যে যে অসুস্থ বা সফরে থাকে, সে অন্য সময়ে 'এই সংখ্যা' পূরণ করবে।" (সূরা বাকারা, আয়াত: ১৮৪ )।

শর্ত এই যে, যতটুকু সফরে যায় ততটুকু নামায সংক্ষিপ্ত করা জায়েয। তবে নামায ভঙ্গের মত রোযা ত্যাগ করা জরুরী নয়; বরং ব্যক্তি ইচ্ছা করলে রোজা রাখতে পারে এবং ভঙ্গ করতে পারে। রোজা ভেঙ্গে গেলে পরে আদায় করতে হবে। আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ আমরা রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর সাথে রমজানে সফর করলাম। সুতরাং যে ব্যক্তি রোজা রাখল সে রোজা ভঙ্গকারীকে দোষারোপ করল না এবং যে ব্যক্তি রোজা রাখল সে রোজাদারকে দোষারোপ করল না। (সহীহ বুখারী, হাদিস: ১৯৪৭)। 

৫ . অনিবার্য কারণ: কখনও কখনও বিশেষ প্রয়োজন মেটাতে এবং আসন্ন বিপদ এড়াতে রোজা না রাখার অজুহাত থাকে। যেমন ডুবে যাওয়া বা দগ্ধ ব্যক্তির চিকিৎসা রোজা ভঙ্গ করা ছাড়া সম্ভব নয়। কিন্তু সে ব্যক্তিও পরে রোজা রাখবে। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন: "আমরা রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর সাথে রোজা রাখার পর মক্কার উদ্দেশ্যে যাত্রা করলাম। আমরা একে একে আমাদের যাত্রা বন্ধ করে দিলাম, তখন রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বললেনঃ তুমি তোমার শত্রুর কাছে এসেছ। রোজা ভঙ্গ করলে তোমার শক্তি বৃদ্ধি পাবে। (সহীহ মুসলিম, হাদিস: ১১২০)। 



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আজকের আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url
ajkerit
ajkerit
ajkerit
ajkerit