বাংলা ইসলামিক গল্প 🌺আলো🌺 পর্ব - ০৪ Bangla Islamic Story 🌺 Alo 🌺 No- 04
বাংলা ইসলামিক গল্প 🌺আলো🌺 পর্ব - ০৪ |
বাংলা ইসলামিক গল্প 🌺আলো🌺 পর্ব - ০৪
অফিস আওয়ার শেষে আলো নিজের ব্যাগ চেক করে তারপর ভোরের কেবিনে যায় দেখতে কোনো কিছু ভোর রেখে গেলো কি না?? হুম ভোর আজও ওর ওয়ালেটটা ফেলে রেখে চলে গেছে। আলোও তাড়াহুড়ো করে নিচে যাচ্ছে ভোরকে ওয়ালেটটা দেবার জন্য।
আলো লিফট থেকে বের হয়ে দৌড়ে যাচ্ছিলো কিন্তু কিছু দূর গিয়েই থেমে গেলো। কারন মিরা ভোরের সাথে কথা বলছে ভোরের একদম গা ঘেষে। এর আগেও আলো এসব দেখছে কিন্তু কখনো কোনো খারাপ লাগা কাজ করেনি কিন্তু আজ বুকের ভিতর ধুক করে উঠলো। আর সামনে এগিয়ে যেতে পারছে না। ওখানেই পাথরের মতো দাঁড়িয়ে রইল আর এক দৃষ্টিতে ওদের দেখছে। ভোর অনেক হেসে কথা বলছে। মিরা যে ভোরের গায়ে ঘেষে দাড়িয়ে আছে এতে ভোরের কোনো ভ্রুক্ষেপ নাই।
ভোর পাশ ফিরে তাকাতেই দেখে আলো দাঁড়িয়ে আছে। তাই....
ভোরঃঃ কি ব্যাপার আলো আপনি? কিছু বলবেন?
|
আলোঃঃ হুম। আপনার ওয়ালেট!!!
|
ভোরঃঃ ওহ। ভুলে গেছি দিন।
|
তারপর মিরা ভোরকে বায় বলে চলে গেলো। আলোও চলে যাচ্ছিলো কিন্তু কি মনে করে পিছনে ফিরে বললো....
আলোঃঃ স্যার আমাকে বাসায় একটু নামিয়ে দিবেন??
|
ভোর একটু ভেবে বললো.... ok চলুন।
|
আলো উঠে বসলো। ভোর ওর পাশেই বসা। ড্রাইভার ড্রাইভ করছে গাড়ী। আলো ভোরের দিকে তাঁকিয়ে আছে। ভোর একটু আগে খেয়াল করলো আলো ওর দিকে তাঁকিয়ে আছে সেই কখন থেকে।
|
ভোরঃঃ কিছু বলবেন??
|
আলোঃঃ ডিভোর্সটা কবে দিচ্ছেন??
|
ভোরঃঃ কিসের?
|
আলোঃঃ আমাদের!
|
বলেই আলো বাহিরে তাঁকিয়ে রইল। ভোরও নীরব হয়ে গেল।
|
এভাবেই অনেকক্ষণ ছিলো দুজনই নীরব। নীরবতা ভেঙ্গে
|
আলোঃঃ বল্লেন না এখনো? ((বাহিরে দৃষ্টি রেখে))
|
ভোরঃঃ খুব শীঘ্রই। (( আলোর দিকে তাঁকিয়ে))
|
আলোঃঃ তাহলে সবটা দয়া ছিল??
|
ভোরঃঃ একটা ঘোর..দুঃস্বপ্ন ছিল। আমি এ থেকে পরিত্রাণ পেতে চাই।
|
আলোঃঃ আমার সর্বস্ব নিয়ে আপনার দুঃস্বপ্ন হয়। হুম দিয়ে দিবো পরিত্রাণ।
|
আর কোনো কথা হয় না। আলোকে ওর বাড়ী নামিয়ে দিয়ে ভোর চলে যায়।
|
আলোর এখন আর কিছু ভালো লাগে না। ইদানীং অফিসের কাজে অনেক ভুল হয়। মিরাকে ভোরের আশেপাশে দেখলে বেশি কষ্ট হয়। এভাবে কেটে যায় ১টা মাস। এখনো কেউ জানে না ভোর আর আলোর বিয়ের কথা। শুধুমাত্র শাহেদ সাহেব ছাড়া।
|
প্রতিদিনকার মত আজও আলো অফিস দিয়ে বাসায় একা যাচ্ছিলো। কিন্তু ৪/৫টা বাজে ছেলে আলোর পিছু নিয়েছি আজ। আলোকে ফলো করতে করতে আলো যে বাসে উঠেছে ওরাও সে বাসে উঠেছে। আলোর খুব ভয় করছে। আলো বাস স্টপ থেকে নেমে গেলো। ছেলেগুলো এবার সুযোগ বুঝে আলোর চারপাশে ঘিরে ধরেছে। আলো প্রচণ্ড ভয়ে সেন্সলেস হয়ে পড়ে।
|
আলোর চোখগুলো মৃদু খুলে দেখে ও একটা অন্ধকার রুমে তবে জানালা দিয়ে হাল্কা আলো এসেছে। আলো ফিল করলো ও কোনো শক্ত কিছুর উপর আছে। তাই জানালার হাল্কা আলোতে দেখার চেষ্টা করলো কিসের উপর ও শুয়ে আছে?? আর ভালো করে দেখতেই দেখে আলো ভোরের বুকের উপর শুয়ে আছে। ভোর আসলো কোথা থেকে ভাবতেই মনে পড়ল গতরাতের ঘটনা.... আলো যখন সেন্সলেস হয়ে পড়ে যায় তখন ছেলেগুলো ওকে কোলে তুলে নির্জন জায়গায় নিয়ে গেলো। নিয়ে রাখার সাথে সাথে আলোর সেন্স ফিরে। তখন দেখে জানোয়ার গুলো সব আলোর দিকে ঝুঁকে আসছে। তখন আলো চিৎকার দিলো কয়েকটা। ভোর সেই রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলো... আলোর কন্ঠ শোনার সাথে সাথে গাড়ী থেকে বের হয়ে দৌড়ে যায় ওরা আলোর কোনো ক্ষতি করারা আগেই। তারপর ওদের পিটিয়ে ভোর আলোকে নিয়ে আসে। আলো তখনও পুরোপুরি সেন্স ফিরে পায়নি। তাই ভোরকে দেখেও চিল্লাপাল্লা করছিলো।আর চিল্লাতে চিল্লাতে আবারও সেন্সলেস হয়ে পড়ে ভোরের উপর। তারপর ভোর ওকে ঐ ঘরে নিয়ে যায়।
|
এই হাল্কা আলো অন্ধকারে ভোরকে দেখতে বেশ মায়াবী লাগছে। আলো কিছু না ভেবেই ভোরের ঠোঁটে নিজের ঠোঁট হাল্কা করে ছুঁয়ে দিলো। মেয়েটা বেশ লজ্জা পাচ্ছে।
|
আলো ভোরের দিকে তাঁকিয়ে বলতে লাগলো.... একবার যখন আপনার বুকে মাথা রেখেছি তবে এই বুকটা সারাজীবন আমারই করে নিবো। কি করে নিবো সে না হয় আগামীকাল থেকেই দেখবেন নতুন রূপে আর এক আলোকে...বলেই আলো আবার ভোরের ঠোঁট ছুঁয়ে দিলো। এরপর নিজেকে ঠিক করে ভোরকে না জাগিয়ে বাসায় চলে আসল। আসার সময় আলো একটা চিরকুট লিখে পাশের ল্যাম্প টেবিলের উপর রেখে গেছে।
|
ভোরের ঘুমটা ভেঙ্গেছে আড়মোড়া কেটে উঠলো। জানালার পর্দা সরাতেই দেখে আলো নেই। ফোনটা নেবার জন্য টেবিলে হাত বাড়ায় দেখে সেখানে একটা চিরকুট। চিরকুটটা হাতে নিয়ে দেখা লেখা...... উম্মাহ my sweet husband. I love u.. তোমার বৌ আলো।
ভোর চিরকুটটা পড়ে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায়। পাগল ছাগল বলে এড়িয়ে যায় আলোর দেয়া শব্দ গুলো। ভোর উঠে ফ্রেশ হয়ে বাড়ি চলে যায়। আজ শুক্রবার অফিস বন্ধ।
|
আলো বাড়ী গিয়ে বাবাকে সব বলে। আলোর বাবা একটু ভয় পায়। তবুও আলোর মুখে হাসি দেখে ভয়টা দূর হয়ে গেলো।
|
আজ ভোর অফিসে আসছে কিন্তু আলো এখনো আসেনি। ভোরের কেবিনের কিছু ঠিক নাই চজ একটুও। ভোরের প্রচন্ড রাগ উঠে আলোর উপর। রাগে গজ গজ করতে করতে আলোর ডেস্কে যায়। গিয়ে দেখে ফাঁকা। তারমানে আলো এখনো আসেনি। এই প্রথম আলো লেট।তাই বেশিই রাগ ওঠে ভোরের। নিজের কেবিনে গিয়ে গুম মেরে বসে থাকে।
|
১৫ মিনিট পর আলো অফিসে আসে। সবাই আলোর দিকে হা করে তাঁকিয়ে থাকে। কারন আজ আলোকে খুব মিষ্টি লাগছে। হাল্কা গোলাপি আর এ্যাশ কালারের মিক্সড একটা শাড়ি পড়েছে। কালো ব্লাউজ.. থ্রি-কোয়াটার হাতা। ঠোঁটে হাল্কা লিপস্টিক.. কানে একটা টপ।চুলে খোলা খোপা। হাতে দুইটা চুড়ি।
|
আলো সবার সাথে কুশল বিনিময় করে.. সোঁজা ভোরের কেবিনে গেলো। আজ আর পারমিশন নেয় নি।
ভোর সামনে তাঁকাতেই দেখে আলো। আলোকে কিছু বলবে তার আগেই আলো সোঁজা এসে ভোরের কোলের উপর উঠে বসলো ভোর কিছু বুঝে ওঠার আগেই।
|
আলোঃঃ Good morning... Dear husband.. বৌকে মিস করছিলেন?
|
ভোরঃঃ কি হচ্ছে এসব?? আপনি আমার কোলের উপর বসছেন কেন? এতো সাহস কই পান??
|
আলোঃঃ আপনি আমার সমস্ত শরীরের উপর উঠেছিলেন। আপনার কাছ থেকে শিখছি। দেখেন তো আমায় কেমন লাগছে?? (( কোলের উপর থেকে উঠে দাঁড়িয়ে দেখাচ্ছে))
|
ভোরঃঃ Get lost..
|
আলোর রাগ উঠলো তাই আবার গিয়ে ভোরের কোলে উঠে বসলো.....
আলোঃঃ No...get lost... now get in..(( ভোরের ঠোঁটে হাত দিয়ে))
ভোর এবার রাগে ফায়ার। ভোর রাগে কিছু বলতে যাবে তখনই আলো ভোরের ঠোঁটে নিজের ঠোঁট খুব শক্ত করে চেপে ধরে।
ভোর কিছুই করতে পারছিলো না কারন এমন কিছু হবে ভোর বুঝতে পারেনি কখনো।
|
কিছুক্ষণ পর ছেড়ে দিয়ে... আলোঃঃ মর্নিং কিস এটা। আর সাহস দেখাতে আসবেন না। কি কি হয় আরও দেখতে থাকুন মেরি পেয়ারি বর।
|
এই বলে আলো আসে নিজের ডেস্কে। নিজের ডেস্কে এসে হাফ ছেড়ে বাঁচলো মনে হয়। কত সাহস সঞ্চয় করে এসব করলো এগুলা ভাবতেই আলোর পশম দাঁড়িয়ে যাচ্ছে.....
|
|
|
চলবে.............
(( ছোট হওয়ার জন্য দুঃখিত। আগামীকাল দুইটা পর্ব দিবো আর বড় দিবো। ☺))
আজকের আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url